যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট- মন্ত্রীর পদত্যাগ

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট-বিষয়ক মন্ত্রী (ব্রেক্সিট সেক্রেটারি) ডেভিড ডেভিস পদত্যাগ করেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ কার্যকর করা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র সঙ্গে নীতিগত বিরোধের জের ধরে ডেভিড পদত্যাগ করেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার রাতে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

সেই পদে আজ সোমবার সকালে ডোমিনিক রাবকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ডোমিনিক রাব ২০১৬ সালের গণভোটে ইইউ সঙ্গে বিচ্ছেদের পক্ষে প্রচার চালান। তিনি আবাসন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে কাজ করছিলেন।

ইইউ’র সঙ্গে বিচ্ছেদ কার্যকর করা নিয়ে অনেক দিন ধরে যুক্তরাজ্য সরকারের মধ্যে চরম বিভক্তির কথা শোনা যাচ্ছিল। ডেভিড ডেভিসের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে তা এখন প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এই পদত্যাগের ঘটনাকে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এতে বিচ্ছেদ কার্যকর করা নিয়ে ইইউর সঙ্গে চলমান সমঝোতায় যুক্তরাজ্যের অবস্থান আরও দুর্বল হয়ে পড়বে বলেও আশঙ্কা।২০১৬ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত এক গণভোটে যুক্তরাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার ইইউ’র সঙ্গে বিচ্ছেদের পক্ষে রায় দেয়। ‘ব্রেক্সিট’ নামেও পরিচিত এই বিচ্ছেদ। এই বিচ্ছেদ কার্যকর করতে যুক্তরাজ্য সরকার ‘ডিপার্টমেন্ট অব এক্সিটিং ইইউ’ নামে নতুন একটি দপ্তর (ডিপার্টমেন্ট) খোলে। সংক্ষেপে ‘ব্রেক্সিট’ দপ্তর হিসেবে পরিচিত এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান ইইউ বিরোধী রাজনীতিক ডেভিড ডেভিস। ব্রেক্সিট সমঝোতায় তিনি যুক্তরাজ্যের পক্ষে শুরু থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

চলমান সমঝোতা অনুযায়ী, ২০১৯ সালের মার্চে ব্রেক্সিট কার্যকর হওয়ার কথা। এরপর উভয় পক্ষের সম্মতি অনুযায়ী ব্যবসা-বাণিজ্যকে স্বাভাবিক অবস্থায় বজায় রাখতে এবং নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত একটি অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা বজায় রাখার কথা। তবে ব্রেক্সিট পুরোপুরি কার্যকর হওয়ার পর যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ইইউর বাণিজ্য সম্পর্ক কী হবে, তা নিয়ে চরম মতবিরোধ রয়েছে উভয় পক্ষে।

গত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে মন্ত্রীদের সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠকে ইইউ’র সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নীতি ঠিক করেন।

গতকাল রোববার পদত্যাগের পর ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিস ডেভিস বলেন, প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ‘খুব সহজে খুব বেশি’ ইইউ’র হাতে তুলে দেওয়ার কৌশল নিয়েছে। এতে ইইউ’র চাহিদা আরও বেড়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।এ ছাড়া, প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যৎ সম্পর্কের যে কৌশল ঠিক করেছেন তাতে কেবল নামমাত্র ব্রেক্সিট হবে বলে মন্তব্য করেন ডেভিড ডেভিস। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য হয়তো ইইউ’র কাস্টমস ইউনিয়ন (এর মাধ্যমে সদস্য দেশগুলো অন্য দেশের সঙ্গে একই শুল্ক হারে ব্যবসা করে) এবং একক মার্কেটে (সদস্য দেশগুলোর শুল্কমুক্ত একক বাজার) থেকে যাবে। ডেভিড ডেভিস বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে যে নীতিতে বিশ্বাস করেন না, সেটির পক্ষে সাফাই গাওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। যে কারণে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ডেভিড ডেভিসের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। তাঁর কাজের জন্য ধন্যবাদ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে বলেছেন যে, ডেভিড ডেভিস সরকারের গৃহীত নীতির যে বর্ণনা দিচ্ছেন সেটি সঠিক নয়।


Spread the love

Leave a Reply