ছাত্রলীগের নতুন মডেল ” বিশ্ববিদ্যালয়ে কাউকে পড়তে দেয়া যাবেনা ” !

Spread the love

ঢাকা সংবাদদাতাঃ
“ছাত্রলীগ আসছে নতুন মডেল নিয়ে ” আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এই কথার মিনিং কি এই যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাউকে পড়তে দেয়া যাবেনা। এই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নিজস্ব সম্পদ ? তাঁরা ছাত্রলীগকে নিয়ে নতুন করে ভাবছেন। সামনে ছাত্রলীগের সম্মেলন আছে। সেই সম্মেলনে ছাত্রলীগকে নেতৃত্ব গঠনের দিক দিয়ে এবং কাজের দিক থেকে নতুন মডেলে করার নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আছে।তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা কি এইযে, কোটা সংস্কার আন্দোলন যারা করছে তাদের কাউকে রেহাই নাই! একেক করে সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দিবে ছাত্রলীগ ? এটাই তাহলে ছাত্রলীগের নতুন মডেল? এমনটা ভাবছেন বুদ্ধিজীবিরা । বাংলাদেশকে মেধা শুন্য করে রাখাতে সরকারই কি যতেষ্ট নয়? এই কথাগুলা বাংলাদেশের সাধারন জনগন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক সচেতন সকলেই ভাবেন । কিন্তু কারোর কিছু বলার বা করার সাহস নাই। কারন বাংলাদেশে প্রতিটা মানুষ আওয়ামীলীগ ও তার সরকারের কাছে জিম্মি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে যে ছাত্রলীগ নেত্রী সাধারন শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করল,সেই ছাত্রলীগ নেত্রী জুতার মালা থেকে ফুলের মালা বরণ করল প্রধানমন্ত্রী হাসিনার নির্দেশে । আর যারা নির্যাতিত হল তাদের বহিস্কার ও হল থেকে বের করা দেয়া হচ্ছে সেটাও কি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাই স্পস্ট নয়কি?
বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হল থেকে ছাত্রীদের বের করে দেয়ার আগে হলের হাউস টিউটররা ফ্লোরে ফ্লোরে পাহারা বসিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
 
এদিন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কমপক্ষে ৫০ ছাত্রীকে হল ত্যাগে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। হল কার্যালয় সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
 
ওই ৫০ জন ছাত্রীর সবাইকে একসঙ্গে বের না করে ভাগ করে বের করে দেয়া হয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
 
একরকম জোরপূর্বক হল থেকে বের করে দেয়ার পর ছাত্রীদের স্থানীয় অভিভাবকরা এসে তাদের নিয়ে যান।
 
জানা গেছে, ছাত্রীদের নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের (অভিভাবক) কারও সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। ফলে অভিভাবকরা গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে মুখ খুলতে রাজি হননি।
 
ভুক্তভোগী ও হলের অন্যান্য ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১১ এপ্রিল কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন ছাত্রলীগ নেত্রী এশাকে লাঞ্ছনাসহ সংঘটিত ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে সুফিয়া কামাল হল কর্তৃপক্ষ।
 
সেই কমিটি ছাত্রী লাঞ্ছনার অভিযোগ থেকে ছাত্রলীগ নেত্রী এশাকে অব্যাহতি দিয়ে উল্টো ২৬ ছাত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে।
 
পরে তদন্ত কমিটি সাক্ষাৎকার গ্রহণের নামে এশার ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ডেকে নিয়ে এমন হয়রানি করেছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।
 
বৃহস্পতিবার হলটির একাধিক ছাত্রী ও তাদের পরিবার হয়রানির বিষয়টি জানান।
 
তারা বলেন, হল ত্যাগে বাধ্য করা, মুঠোফোন জব্দ, মামলায় জড়ানোর হুমকি এবং অভিভাবকদের ফোন দেয়া সহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়।
 
এর মধ্যেই পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী রিমির বাবা বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় ফোন পেয়েছেন হল কর্তৃপক্ষের। ঝড়বৃষ্টির কথা বলে তিনি রক্ষা পাননি। কর্তৃপক্ষের নির্দেশ রাতেই মেয়েকে নিয়ে যেতে হবে। ফলে সাভারের ধামরাই থেকে রওনা হয়ে রাত পৌনে ১টায় হল গেটে পৌঁছান। রিমির বাবা ফারুক হোসেন জানান, সুফিয়া কামাল হলে মারামারির সময় তার মেয়ে সাভারে ছিল। কারণ ওই দিন তার নানা মারা যান। মাত্র দুদিন আগে সে হলে ফিরেও রক্ষা পায়নি। এশার ক্রোধেই তাকে হল ত্যাগ করতে হয়েছে বলে অভিযোগ ওই অভিভাবকের।
 
এদিকে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে হাউস টিউটরদের কক্ষে আটকে রেখে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
 
পরবর্তী সময়ে রাত ১০টার দিকে তার মুঠফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে অন্য একজন কল রিসিভ করে বলেন, এখন তাকে দেয়া যাবে না। পরে ফোন করেন।
 
ঘটনার বিষয়ে জানতে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিতা রেজওয়ানা রহমানকে ফোন করা হয়। ফোনে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে কল কেটে দেন তিনি। এর পর একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি আর কল রিসিভ করেননি।
 
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ছাত্রীদের হয়রানির অভিযোগ সত্য নয়। এগুলো গুজব। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে একটি দুষ্টচক্র গভীর ষড়যন্ত্রে নেমেছে। হয়রানির মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।
 
গভীর রাতে হল থেকে ছাত্রীদের বের করে দেয়ার সময় সংবাদকর্মীসহ বাইরের কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। ছাত্রীরা অভিযোগ করে জানান, বিভিন্ন বিভাগের মেয়েরা এ সময় হলের মাঠে জড়ো হন। কর্তৃপক্ষ তাদের নাম-ঠিকানা জোগাড় করে মাঠ ত্যাগ করতে নির্দেশ দেন। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেয়া হয়।

Spread the love

Leave a Reply