আহ ! নিষ্ঠুর পেট্রোলবোমা

Spread the love

Jessore-2-burn-dead-BM-up0221বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ
স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে চার দিন সমুদ্র সৈকতে ঘুরেছেন যশোরের বিশিষ্ট ঠিকাদার নুরুজ্জামান পপলু। মজার ও আকর্ষণী ছবি তুলেছেন। সেই গ্রুপ ছবি দশম শ্রেণীতে পড়া মেয়ে মাহিশা নাহিয়ানের ফেসবুকে আপলোড করেছেন। কিন্তু কে জানতে এ ছবি এবং বেড়ানোই তাদের শেষ মুহূর্ত।
সোমবার শেষ হওয়া এ আনন্দভ্রমণ ভোরের আলো ফোটার আগেই স্মৃতি হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার ভোরে কক্সবাজার থেকে ফেরার পথে কুমিল্লায় পেট্রোল বোমায় নিহত হয়েছেন যশোর শহরের প্রিয়মুখ নুরুজ্জামান পপলু (৪৯) ও তার মেয়ে মাহিশা নাহিয়ান (১৪)। দগ্ধ হয়েছেন পপলুর স্ত্রী মাহাফুজা বেগম মিতা। এসময় অবরোধকারীদের ছোড়া পেট্রোলবোমা কেড়ে নিয়েছে মোট সাতজনের প্রাণ। দগ্ধ হয়েছে আরো ২০ জন।
নুরুজ্জামান পপলু পেশায় ঠিকাদার। তিনি যশোর শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোড এলাকার রোকনউদ্দিনের ছেলে। পপলুর মেয়ে মাহিশা যশোর শহরের পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়েরে দশম শ্রেণীর ছাত্রী।
Jessore-2-burn-dead-BM-up0011পপলুর সেজো ভাইয়ের ছেলে ফারদিন জামান জানান, তার চাচা কক্সবাজারে একটি ঠিকাদারি কাজ পেয়েছেন। একাজ দেখাশোনা করতে তিনি কক্সবাজারে যাবেন শুনে মাহিশা সেখানে ঘুরতে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে মেয়ের আগ্রহের কারণেই ঠিকাদার পপলু তাকেসহ স্ত্রী মাহাফুজা বেগম মিতাকে নিয়ে বৃহস্পতিবার কক্সবাজারে রওনা দেন। এসময় তারা কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত ঘুরে দেখেন এবং সেখানে তোলা ছবিও ফেসবুকে আপলোড করেন।
Jessore-2-burn-dead-BM-up03পপলুর ছোট ভাই যশোর শহর আওয়ামী লীগ নেতা কামরুজ্জামান বলেন, সোমবার রাতে তারা কক্সবাজার থেকে ফিরছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) ভোর সাড়ে ৩টার দিকে তাদের বহনকারী আইকন পরিবহনের বাসটি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পৌঁছালে অবরোধকারীদের ছোড়া পেট্রোলবোমায় ঘটনাস্থলেই ভাই পপলু ও ভাইয়ের মেয়ে মাহিশা মারা যান।
এদিকে, ঘোপ সেন্ট্রাল রোড এলাকার একই পরিবারের বাবা ও মেয়ের মৃত্যু খবর এবং মায়ের অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনরা শোকে পাথর হয়ে পড়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুরে কক্সবাজার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে ঢাকায় আসার সময় আইকন পরিবহনের একটি বাসে (ঢাকা-মেট্রো ব-১৪-৪০৮০) পেট্রোলবোমা ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। এতে পুড়ে মারা যায় সাতজন যাত্রী। দগ্ধ ও আহত হয় অন্তত ১৭ জন যাত্রী। তাদের চৌদ্দগ্রাম ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গুরুতর অবস্থায় ৭ জনকে নিয়ে আসা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে।


Spread the love

Leave a Reply