রিফাতের স্ত্রী মিন্নির সঙ্গে খুনি নয়ন বন্ডের বিয়ের বর্ণনা দিলেন কাজী

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃরিফাত হত্যার বিচারের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে সারাদেশ। এ ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে নানা রকম কথা বলছে লোকজন। কেউ বলছেন- নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল খুনি নয়ন বন্ডের। আবার কেউ বলছেন- রিফাত শরীফের আগে মিন্নির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল নয়ন বন্ডের। ফেসবুকে মিন্নির সঙ্গে নয়ন বন্ডের কয়েকটি ছবি ছড়িয়ে পড়ায় এ বিতর্ক চলছে।

এ ব্যাপারে আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি গণমাধ্যমকে বলেন, নয়ন আমাকে খুব উত্ত্যক্ত করতো। আমাকে হুমকি দিত এবং অস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখাত। আমার ভাই কলেজ রোড এলাকার একটি স্কুলে পড়ে। নয়ন আমার স্কুল পড়ুয়া ভাই এবং বোনকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমার বাবাকেও বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিত। একদিন অস্ত্রের মুখে আমাকে জিম্মি করে একটি বাসায় নিয়ে যায় নয়ন। পরে সেখানে বসে একটি কাগজে আমার স্বাক্ষর নেয় সে। তবে সেই স্বাক্ষর দিয়ে নয়ন কিছু করেছে কি-না আমি জানি না।

তিনি আরও বলেন, যারা আমার নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোংরা মন্তব্য করেছে, আমি তাদের শাস্তি চাই।

মিন্নি বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে একমাত্র রিফাত শরীফের সঙ্গে। এছাড়া আমার আর কখনো কারও সঙ্গে বিয়ে হয়নি। যেহেতু বিয়েই হয়নি, ডিভোর্স হওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। রিফাতই আমার স্বামী এবং এটাই সত্য। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটাই দাবি করি, যারা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই।

এদিকে নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নির সঙ্গে প্রধান অভিযুক্ত সাব্বির হোসেন নয়ন ওরফে নয়ন বন্ডের বিয়ে হয়েছিল বলে নিশ্চিত করেছেন কাজী মো. আনিসুর রহমান ভূঁইয়া। তিনি বরগুনা পৌরসভার ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্টার। বরগুনা পৌরসভার ডিকেপি রোডের কেজি স্কুল নামক স্ট্যান্ডে তার অফিস।

নয়ন বন্ডের ও আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বিয়ের প্রথম স্বাক্ষী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের দ্বিতীয় আসামি বাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজি। গত বছরের ১৫ অক্টোবর আছরের নামাজের পর তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের দেনমোহর হয়েছিল ৫ লাখ টাকা। তবে দেনমোহরের কোনো নগদ পরিশোধ ছিল না।

কাজী মো. আনিসুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, বিয়ে করার জন্য নয়ন ও মিন্নিসহ ১৫ থেকে ২০ জন লোক আসে আমার অফিসে। এসময় নয়ন ও মিন্নি তাদের ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার প্রমাণস্বরূপ এসএসসি পরীক্ষার সার্টিফিকেট নিয়ে আসে। এরপর আমি মেয়ের বাবার সঙ্গে কথা জানতে চাইলে তারা বলে, মেয়ের বাবা আসবে না, আপনি মেয়ের মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর মিন্নির মা পরিচয়ে একজন আমার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।

তিনি আমাকে বলেন, বিয়ের বিষয়টি আমরাতো জানি। মিন্নির বাবা বিয়েটা এখন মানবে না। আপনি বিয়ে সম্পন্ন করেন। বিয়ের কিছুদিন পর ঠিকই মেনে নেবেন। এরপর আমি পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে নয়ন ও মিন্নির বিয়ে সম্পন্ন করি। এ বিয়ের উকিল ছিলেন শাওন নামের একজন। শাওন ডিকেপি রোডের মো. জালাল আহমেদের ছেলে।

এর আগে ৭ জুন নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন মিন্নি। সেখানে তিনি লেখেন, ‘তোরে ভুলে যাওয়ার লাগি আমি ভালোবাসিনি সব ভেঙ্গে যাবে এভাবে ভাবতে পারিনি তুই ছাড়া কে বন্ধু হায় বুঝে আমার মোন তুই বিহনে আর এ ভুবনে আছে কে আপন?’

প্রসঙ্গত, বুধবার (২৬ জুন) বরগুনার কলেজ সড়কের ক্যালিক্স কিন্ডারগার্টেনের সামনে দিনে দুপুরে স্ত্রীর আয়েশা আক্তারের সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে দুর্বৃত্তরা। এই হামলার ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। নিহত রিফাত শরীফ সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের দুলাল শরীফের ছেলে।


Spread the love

Leave a Reply