আন্দোলনকারীর গায়ে হাত তুলে সাময়িক বরখাস্ত হলেন প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ড

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ পরিবেশ আন্দোলনকারী এক নারীর গায়ে হাত তোলার কারণে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ডকে। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই আজ শুক্রবার তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। তদন্ত চলাকালে তিনি বরখাস্ত থাকবেন। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গত বৃহস্পতিবার লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টারের ম্যানশন হাউসে অর্থমন্ত্রীর বার্ষিক ভাষণ ও ভোজসভা ছিল। সেখানে অতিথি ছিলেন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও রাজনীতিকেরা। অতিথি ঠাসা বিশাল মিলনায়তনের এক পাশ দিয়ে এক নারী সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ড চেয়ার থেকে উল্টো দিকে ফিরে ওই নারীকে আটকান। তাঁকে শুরুতে পিলারের সঙ্গে ঠেসে ধরেন। এরপর ঘাড় ধরে ওই নারীকে অনুষ্ঠানস্থল থেকে বের করে দেন।

স্থানীয় সময় রাত নয়টার ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা এই ভিডিও দেখে একে প্রতিমন্ত্রীর ‘জঘন্য আচরণ’ বলে মন্তব্য করেন।

রাতেই আইটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্ক ফিল্ড দাবি করেন, তিনি ভেবেছিলেন ওই নারীর কাছে অস্ত্র থাকতে পারে। অতিথিরা ভয় পাচ্ছিলেন। তাই তিনি ওই নারীকে বাধা দিয়েছেন। তবে গায়ে হাত তোলার জন্য তিনি ওই নারীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। নিজের আচরণের বিষয়ে তদন্তের জন্য তিনি দল ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়ের কাছে (কেবিনেট অফিস) নিজেকে সমর্পণ করেন।

এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ঘটনার ভিডিও দেখেছেন এবং এটিকে বেশ উদ্বেগজনক মনে হয়েছে তাঁর। পুলিশ জানিয়েছে, তারা ঘটনাটি তদন্ত করছে। মার্ক ফিল্ড নিজেও বিষয়টি তদন্তে কনজারভেটিভ দল ও কেবিনেট অফিসের কাছে সুপারিশ করেছেন। তদন্ত শেষ হওয়ার আগপর্যন্ত তিনি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত থাকবেন।’

পৃথিবীকে রক্ষায় জলবায়ুর পরিবর্তন ঠেকাতে যুক্তরাজ্যে কয়েক মাস যাবৎ জোর আন্দোলন চলছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আন্দোলকারীরা বিভিন্ন স্থানে হাজির হয়ে নিজেদের দাবির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন।

বৃহস্পতিবার লাল পোশাকধারী একদল নারী আন্দোলনকারী ম্যানসন হাউসের ওই আয়োজনে হাজির হন। তাঁদের গলায় ছিল ‘ক্লাইমেট ইমারজেন্সি’ লেখা উত্তরীয়। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিজেদের পরিচয় দিয়েই তাঁরা জোর করে অনুষ্ঠানে প্রবেশ করেন।

ওই অনুষ্ঠানের অতিথিরা জলবায়ুর পরিবর্তন ঠেকাতে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। সে কারণেই তাঁরা নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরতে সেখানে যান। তাঁদের প্রতিটি কর্মী শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্দোলন করার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।

হট্টগোলের পর বক্তব্য দিতে গিয়ে চ্যান্সেলর ফিলিপ হ্যামন্ড বলেন, বিস্ময়ের ব্যাপার হলো প্রথম কোনো বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য কার্বন নিঃসরণের মাত্রা ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্যে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, আন্দোলনকারীরা ২০২৫ সালের মধ্যেই কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার দাবি করছেন। তবে সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, এ দাবি অবাস্তব।


Spread the love

Leave a Reply