অ্যাসাঞ্জকে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যুক্তরাজ্য

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃইকুয়েডরকে যুক্তরাজ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, এমন কোনও দেশে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে তারা প্রত্যর্পণ করবে না, যেখানে তার মৃত্যুদণ্ডের আশঙ্কা রয়েছে। এ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নথির অনুলিপি সূত্রে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনোকে লেখা চিঠিতে সাবেক ও বর্তমান দুই ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আশ্বাস দিয়েছিলেন। মোরেনো শুরু থেকেই দাবি করে আসছেন, উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতার মৌলিক অধিকার সুরক্ষার প্রশ্নে যুক্তরাজ্যের লিখিত প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন তিনি।২০১২ সালের জুন থেকে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ৪ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) উইকিলিকসের টুইটে বলা হয়, ইকুয়েডর সরকারের উচ্চ পর্যায়ের দু’টি সূত্র থেকে তারা নিশ্চিত হয়েছে, কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিনের মধ্যে অ্যাসাঞ্জকে দূতাবাস থেকে তাড়ানো হতে পারে। সেই ধারাবাহিকতায় রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাহার করে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) তাকে ব্রিটিশ পুলিশের হাতে তুলে দেয় ইকুয়েডর।

২০১৮ সালের ৭ মার্চ ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট ও ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন স্বাক্ষরিত দু’টি চিঠির অনুলিপি সূত্রে দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্টকে পাঠানো হয়েছিল ওইসব চিঠি। ব্রিটিশ আইনকে উদ্ধৃত করে সেখানে আশ্বস্ত করা হয়েছিল, কোনও ব্যক্তি যদি কোনও দেশে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন, তবে তাকে ওই দেশের হাতে তুলে দেওয়া হবে না।

চিঠিতে মোরেনোকে উদ্দেশ করে লেখা হয়েছে: ‘আপনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাজ্য থেকে প্রত্যর্পণ করা উচিত কিনা। কারণ, প্রত্যর্পণ করা হলে তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার ঝুঁকি রয়েছে। যুক্তরাজ্যের আইন অনুযায়ী আমি নিশ্চিত করছি, কোথাও যদি কোনও ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড হওয়ার ঝুঁকি থাকে তবে তাকে সেখানে বিতাড়িত করা হবে না।’
অ্যাসাঞ্জ গ্রেফতারের পর গার্ডিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোরেনো দাবি করেন, মৃত্যুদণ্ড প্রদানের আশঙ্কা রয়েছে এমন কোনও দেশে অ্যাসাঞ্জকে ফেরত না পাঠানোর ব্যাপারে যুক্তরাজ্য সরকার তাকে আশ্বাস দিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক আশ্রয়ের অধীনে থাকাকালে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসকে গুপ্তচরবৃত্তির কেন্দ্র বানিয়েছিলেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। অভিযোগ উঠেছে, যুক্তরাষ্ট্রের চাপে ও ঋণ মওকুফের শর্তে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। তবে মোরেনো দাবি করেছেন, ভিন্ন কোনও দেশের চাপে তিনি এমন পদক্ষেপ নেননি। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অ্যাসাঞ্জের রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য দূতাবাসের দরজা খুলে দিয়েছিলাম, গুপ্তচরবৃত্তির জন্য নয়’।
ইকুয়েডরের পূর্ববর্তী বামপন্থী সরকার অ্যাসাঞ্জের প্রতি ইতিবাচক ছিল। দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি তাকে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছিল বিগত রাফায়েল কোরেয়া সরকারের সময়ে। তবে বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই তাদের অ্যাসাঞ্জবিরোধী অবস্থান স্পষ্ট হতে থাকে। তবে আগেও মোরেনো দাবি করেছেন, দূতাবাস ছেড়ে গেলেও অ্যাসাঞ্জের মৃত্যুঝুঁকি থাকবে না। এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্য তাকে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।


Spread the love

Leave a Reply