স্বেচ্ছায় মৃত্যুর জন্য লড়াই করছেন ব্রিটেনের এক শিক্ষক

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃনোয়েল কনওয়ে ব্রিটেনের একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তিনি স্বেচ্ছা মৃত্যুর অধিকার চান এবং সেটা নিয়ে যুক্তরাজ্যে বেশ কিছুদিন ধরে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

দেশটিতে স্বেচ্ছা মৃত্যুর অধিকার আইনগতভাবে স্বীকৃত নয়। তিনি এই আইনটির বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত পর্যন্ত গেছেন। কিন্তু দেশটির সুপ্রিম কোর্ট তাকে স্বেচ্ছা মৃত্যুর অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তিনি এখন বলছেন তাকে ঠকানো হয়েছে। তিনি হতাশ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তিকে স্বেচ্ছা মৃত্যুর পথ বেছে নেয়ার অধিকার না দেয়ার এই সিদ্ধান্তকে তিনি ‘মধ্যযুগীয় মানসিকতা’ বলে বর্ণনা করেছেন।

কনওয়ে ২০১৪ সালে মস্তিষ্কের স্নায়ুর এক জটিল ব্যাধি মটর নিউরন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে জানতে পারেন। এই রোগটির কোনো চিকিৎসা নেই। এই অসুখে অবধারিত মৃত্যুর আগে হাত ও পা-সহ শরীরের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ধীরে ধীরে অকেজো হতে থাকে।

এই অসুখটি ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়। যার ফলে এক পর্যায়ে বাকশক্তি আক্রান্ত হওয়াসহ আরও নানাবিধ জটিলতা দেখা দেয়। নোয়েল কনওয়ের মাথা ও গলার নিচে থেকে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ইতোমধ্যেই অকেজো হয়ে গেছে। তিনি চান তার মৃত্যুর যখন ছয়মাস মতো বাকি থাকবে সেসময় তাকে যেনও চিকিৎসকেরা কোন ঔষধ দিয়ে মেরে ফেলেন।

তিনি বলছেন, ভয়াবহ পর্যায়ে যাওয়ার আগে স্বেচ্ছা মৃত্যু হলে তিনি অন্তত সম্মানের সঙ্গে মরতে পারবেন।

বিশ্বের অনেক দেশেই এখন এমন মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তিদের চিকিৎসকের সহায়তায় স্বেচ্ছা মৃত্যুর পথ বেছে নেয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে।

যুক্তরাজ্যে স্বেচ্ছা মৃত্যুর নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে নোয়েল কনওয়ে গত দুই বছর ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তাকে সহায়তা করছে ‘ডিগনিটি ইন ডাইং’ নামে একটি প্রচারণা সংস্থা।

দেশটিতে স্বেচ্ছা মৃত্যুর নিষেধাজ্ঞা বিষয়ক আইনটির নাম ‘সুইসাইড অ্যাক্ট’। যার অধীনে কেউ কাউকে মৃত্যুবরণ করতে সহায়তা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এর বিরুদ্ধে এর আগে দুটি নিম্ন আদালতে মামলা করে হেরেছেন তিনি। এরপর উচ্চ আদালতে গেলে কনওয়ের আপিল শুনতেই রাজি হয়নি দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

২০১৫ সালে একবার সংসদে বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছিল। সেসময় বিশাল সংখ্যক সংসদ সদস্যের বিরোধিতায় ইংল্যান্ড ও ওয়েলস-এ প্রস্তাবটি নাকচ হয়ে যায়। নোয়েল কনওয়ে অবশ্য কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাসের যন্ত্রটি খুলে ফেলে স্বাভাবিক মৃত্যুর পথ বেছে নিতে পারেন। সেই সুযোগ ইংল্যান্ডে রয়েছে। কিন্তু যন্ত্রটির সহায়তা ছাড়াও তিনি এখনও খুব হালকা শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারেন। এর অর্থ হলো যন্ত্রটি খুলে ফেলা হলে তিনি হয়তো দুই তিন মিনিটের মধ্যে মারা যাবেন। অথবা ভয়াবহ নিশ্বাসের কষ্ট নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বেঁচে থেকে তারপর ধুঁকে ধুঁকে মারা যেতে পারেন। সেই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চান এই শিক্ষক।


Spread the love

Leave a Reply